পুলিশ জানিয়েছে, নিউইয়র্কের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া গেছে তার লাশ।
ওই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টটি ফাহিম সালেহর মালিকানাধীন ছিল। এ সময় তার মরদেহের পাশে একটি যান্ত্রিক করাত পাওয়া যায়।
নিউইয়র্কের পুলিশ ধারণা করছে, পেশাদার খুনিরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ফাহিম সালেহর শরীরের বিভিন্ন অংশ অ্যাপার্টমেন্টে ছড়ানো ছিটানো ছিল এবং কিছু অংশ একটি ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
অনলাইনের খবরে ফাহিম সালেহকে একজন মিলিয়নিয়ার প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা হিসেবে বর্ণনা করেছে ব্রিটেনের ডেইলি মেইল।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বাংলাদেশি বাবা-মায়ের সংসারে জন্ম নেয়া প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ। জন্মের পরে পরিবারের সাথে নিউইয়র্কে চলে যান তিনি।
সেখানেই তার বেড়ে ওঠা ও পড়াশুনা। পড়াশুনা শেষে ফাহিম সালেহ নিউইয়র্কেই বসবাস করতেন।
২০১৪ সালে ঢাকায় এসে প্রযুক্তি-ভিত্তিক বেশ কিছু ব্যবসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ফাহিম সালেহ। অনেকগুলো প্রচেষ্ঠা ব্যর্থ হলেও ‘পাঠাও’ উদ্যোগটি তাকে সফলতা এনে দেয়। শুরুতে শুধুমাত্র পণ্য পরিবহন সার্ভিস নিয়ে কাজ করলেও পরবর্তীতে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে পাঠাও।
বাংলাদেশে পাঠাও প্রতিষ্ঠার সাথে ফাহিম সালেহর সাথে আরও দুজন ছিলেন। যাদের কাছে পরবর্তীতে ফাহিম সালেহ তার কিছু শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে নিউইয়র্কে ফিরে যান। তবে থেমে থাকেননি তিনি। এরপর ‘পাঠাও’ এর আদলে অন্য দেশে ব্যবসা প্রসারের চিন্তাভাবনা শুরু করেন ৩৩ বছর বয়সী এ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা।
বিবিসি বাংলা তাদের এক প্রতিবেদনে ঢাকায় পাঠাও রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের কর্মকর্তা ওসমান সালেহর বরাত দিয়ে জানায়, বাংলাদেশে অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং পাঠাও প্রতিষ্ঠার পরে থেকে ফাহিম সালেহ চেয়েছিলেন আফ্রিকা মহাদেশে ব্যবসা বিস্তার করতে।
এর অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে নাইজেরিয়াতে ‘গোকাডা’ নামে একটি রাইড শেয়ারিং সার্ভিস চালু করেন। তার সাথে সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আরও একজন ছিলেন।
ফাহিম সালেহর মালিকানাধীন ‘গোকাডা’ সার্ভিস ডেলিভারিতে এক হাজার মোটর সাইকেল রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই সংকটে পড়ে তারা। কারণ নাইজেরিয়ার সরকার মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং নিষিদ্ধ করে।
টেককাবাল নামে নাইজেরিয়ার একটি প্রযুক্তি বিষয়ক গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে বলছে, সংকটে পড়ার আগে এক বছরেই ‘গোকাডা’ ৫৩ লাখ ডলার আয় করে।
যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ হয়ে গেলে ‘গোকাডা’ পার্সেল ডেলিভারি সার্ভিস চালু করে। বর্তমানে নাইজেরিয়ার রাজধানী লেগোসে তাদের ১০০০ মোটরসাইকেল রয়েছে।